মনে কর তুমি সকালবেলায় রাস্তা দি

মনে কর তুমি সকালবেলায় রাস্তা দিয়ে হেঁটে হেঁটে স্যারের ব্যাচে যাচ্ছ। গলির কয়েকটা ছেলে গাইল,চুমকি চলেছে একা পথে, সঙ্গী হলে দোষ কী দিবা? আরেকটা ছেলে টুউউ-টুউউ শিষ দিল।
তুমি তখন কী বলতা?
অভদ্র কোথাকার!
যদি ছেলেটা এগিয়ে এসে তোমার টোল তোলা গালটা টিপে দিত? তোমার ঠোঁট দুটো ছুঁয়ে বলত, উহ্?
ঠাস করে ওর দু’গালে থাপ্পড় কষে দিতাম।
যদি ছেলেটা তোমাকে জড়িয়ে ধরত?
আমি আকাশকে বলতাম, তুমি অন্ধ নাকি? জলদি বৃষ্টি নামাও। আমরা ভিজব।
তাই! তুমি সত্যিই এমনটা বলতে?
হ্যাঁ। এমন হলে তো তাইই বলতাম।
আচ্ছা যদি ছেলেটা হই আমি? তাহলে তুমি কী বলতে?
ছি! ছি! তোমার কাছ থেকে এমনটা আশা করিনি! তোমার বুকটা ঠেলে সরিয়ে দৌঁড়ে চলে যেতাম।
বখাটেরা জড়িয়ে নিলেই তুমি বৃষ্টি নামাতে পার।আর আমি ধরলেই ওমনি ছি! ছি!।
কারণ ওরা পাগলামিটা করতে জানে।মেয়েদেরকে বোঝে। কবিতায় যাঁরা পদ্ম ফোঁটাতে পারে তাঁদেরকে দূর থেকেই ভালোবাসতে হয়।কাছাকাছি থাকার পাগলামো তাঁরা আঁচ করতে পারে না।
তুমি তো ভালোই দর্শন জান দেখছি।
হ্যাঁ।
আমিও তো বখাটে হতে চাই। অমন পাগলামো করতে চাই।
তাই? তাহলে একদিন অমাবস্যার রাতে যখন শহর ঘুমিয়ে পড়ে,ঝুম ঝুম বৃষ্টিতে আমার দোতলার জানালায় উঠতে পারবে? পারবে, বেলকনির রেলিং-এ ঝুলে থেকে ভিজতে ভিজতে আমায় কবিতা শোনাতে?
ও বাবা! একটু কঠিন হয়ে যাবে। আর তাছাড়া অত রাতে কেয়ার টেকারগুলো আমায় চোর ভেবে ঠ্যাঙাবে। তুমি অন্য অপশন দ্যাও।
রাস্তার মাঝখানে আমার রিকাশা আটকে রেখে বলতে পারবে ‘ভালোবাসি’?
লোকে কী বলবে বলো। একটু সহজ করে কিছু বলো না?
আমি জানতাম তুমি এগুলো পারবে না। তুমি তো কবি। তোমার অনেক সম্মান। কিন্তু ওই বখাটেগুলো ঠিক পারবে। তোমার দৃষ্টিতে হয়ত ওঁরা বেখাপ্পা কিন্তু ভালোবাসাটা ওঁরাই ছিনিয়ে নিতে জানে। এক্ষেত্রে আমি ও-দের মাথায় চন্দ্রবিন্দু-টা বসাব।
আচ্ছা তা তুৃমি চন্দ্রবিন্দু বসাও। কিন্তু আমায় তুমি তুমি’র ত-এর মর্যাদাটা দিও। খণ্ড-ত এর মত আধমোড়া-বাঁচা করে মের না। আমি তোমার জন্য প্রতিদিন দশটা কবিতা লিখব। রাত জেগে জেগে তোমাকে ফোনে শোনাব। হবে?
না। হবে না। যদি পার প্রতিদিন ভোরবেলা বাগান থেকে সদ্য ফোঁটা তাজা গোলাপ হাতে আমার মেসের সামনের রাস্তায় দাঁড়িয়ে থেক। আমার ঘুম ভাঙা অবধি। আর শোনো, আমায় কিন্তু ফোন দেবার চেষ্টা করবা না।
তোমাদের মালকিনীর কুত্তাটা সাতসকালে আমাকে দেখে ঘেউঘেউ শুরু করবে। কেলেঙ্কারি হয়ে যাবে!
ভালোবাসবা আবার কেলেঙ্কারি রটাবা না! হা! হা! তুমি আসলে কী চাও বলতো? গোপন-গোপন প্রেম?
গোপনে ভালোবাসা থাকে না। গোপন প্রেমে থাকে শরীরের চাওয়া-পাওয়া।
এই তুমি রেগে যাচ্ছ! এমন কেন বলছ? আমিতো সত্যিই ভালোবাসাটা চাই।
তাহলে প্রমাণ কর।
আচ্ছা। আরেকটা চান্স দাও। বিশ্বাস কর আমি ঠিক পারব।
ঠিকাছে। কিন্তু এটাই লাস্ট।
হুঁম। বলো।
একদিন বৃষ্টির দিনে দুপুরবেলায় সারা শহর আমার হাত ধরে খালি পায়ে ঘুরতে হবে। আর হ্যাঁ, আমার স্যান্ডেল জোড়া তোমাকেই বইতে হবে। পারবা?
পারব। পারব।(আমাকে যে পারতেই হবে!)

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *