প্রত্যেক রাতে এলার্ম দিয়ে ঘুমাতে যাওয়া আর প্রত্যেক সকালে ঘুম থেকে উঠে উঠে আমি বিরক্ত। প্রত্যেক দিন সেই একই কাজ—রাইস কুকারে চাল চড়াও, আলু চটকাও, তারপর খাও। এতো বছর ধরে এতো খেয়েছি যে আর খেতে ইচ্ছে করে না। ব্যাপারটা এ পর্যন্ত হলেও হয়ত মেনে নিতে পারতাম। কিন্তু না, নিয়ম করে দুই বেলা—সকালে খাওয়ার পর আবার রাতে খাওয়ার পর দাঁত ব্রাশ করতে হবে। কার এতো করতে ভাল লাগে! তারপর পোত্যেক দিন চান করো। হাগা-মুতার কথা আর বলাই বাহুল্য। আমি জাস্ট ফেইড আপ। ফাক!
এতো এতো বিরক্তের কথা না বলে হয়ত সহ্য করাই যেত। কিন্তু সেখানেও ঈশ্বর একটা পরিহাস লিখে রেখেছে। আইরোনি অভ ফেইট আর উল্লেখ না করি, বড়ো লজ্জার কথা। তবু লিখছি ফেইসবুকে পোস্ট করব বলে। অন্তত কেউ কেউ ত স্যাড রিয়াক্ট দিবে। নাই মামার চেয়ে কানা মামা ভালো—আমার অবস্থা এখন এই রকম। দুষ্টু গরুর চেয়ে শূন্য গোয়াল ভালো—এই চিন্তা করে আমি এখন এ্তোটাই শুন্য যে, সামান্য একটা কথা, এই ধরুন, ‘আজ আমার মন খারাপ’, এটাও আমাকে আর কেউ বলতে আসে না। কিছু দিন আগেও এসব ফালতু অথচ কত অসামান্য কথা আমাকে শোনানোর জন্য ব্যবহার করা হত।
কমেন্টের ভাটা এখন ‘প্রান্ত’ পর্যন্ত এসে ঠেকেছে। আর কিছুদিন পর এ-ও আর করবে না। জানি। সুস্ময় হয়ত খুশি হবে এসব অসহায়ত্বের কথা পড়ে। ওর সাথে আবার খিটিমিটি হয়েছে। খিটিমিটি ব্যাপারটা এর সাথে আমার লেগেই থাকে। হা হা। ভালোই লাগে। ওইপারের লোকটাও ভিতরে ভিতরে জ্বলছে—এই জানাটা আমাদেরকে এক গুচ্ছ সুখ এনে দেয়। আমাকেও দেয় কখনো-সখনো কোনো কোনো ব্যাপারে।
আই টক টু নো-ওয়ান এন্ড/অর নো-ওয়ান টক্স টু মি। কী করব বল্, ছেলে বন্ধুদের সাথে আমার মিশতে কথা বলতে ভালো লাগে না। আর মেয়ে বন্ধু পাওয়া আজকের দিনে কারো কারো জন্যে দুধ-ভাত ছাড়া আর কিছুই না। কিন্তু আমার কপালে একটা পান্তাও জোটে না। এইজন্যে তোদের সাথে আরো কথা বলতে রাগ হয়।
তেলাপোকার সাথে সহ-বাস করতে আর ভাল্ লাগছে না। বড্ড বেশি উতপাত করছে। ভাবছি ওষুধ নিয়ে আসব। শেষ করব এই তেলাপোকাদের জীবন। তেলাপোকাদের প্রাণ বড় অদ্ভুত আর শক্ত, কৈ মাছের চেয়েও জীদ্দী। রাতে ওষুধ ছড়িয়ে রাখলে সকালে উঠে দেখা যাবে এখানে ওখানে আরশোলা চিতপটাং পড়ে আছে, ছটফট করতে থাকে উল্টো হয়ে শুয়ে, কিন্তু শালারা মরে না।
আমার জীবন অনেকটা এই শালা তেলাপোকাদের মতন। চিতপটাং, ছটফট, কিন্তু আলাইভ।
অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে ড্রাস্টক্লি আরজ্ করতে চাই, এই শহরে প্রেম নিষিদ্ধ করা হোক। এতো কিছু রিফর্ম করছেন এটাও করে দেন। বড় ভালো হয় যদি এটাকে সাংবিধানিক আইনে পরিণত করা যায়। একটু বিবেচনা করবেন। আমি ভীষণ জেলাস বর্তমান প্রেমিক-প্রেমিকাদের ওপর। ওরা চোখের সামনে হাত ধরা-ধরি, কচলা-কচলি করলে ঠোঁটের কোণে চিলতে হাসি ফুটে ওঠে কিন্তু বুকে পাথর চাপার সমান কিঙ্কিন ব্যাথা অনুভূত হয়। যদি জন্ম থেকেই সিঙ্গেল থাকেন তাহলে বুঝবেন জেলাস না হয়ে উপায় আছে কি না?
ছেলেবেলা মনে পড়ে যাচ্ছে। গ্রামে কাকীমার বেশ কিছু প্রেমিক-পুরুষ ছিল। একেক সময় একেক জনের উজান চলত। যেটা ঘটত তা হলো, ভাটায় পড়ারা তখন চলমানটার ওপর ঈর্ষা করে পাহারা দিত ধরার জন্য। মানে নিজে খাব না, তো অন্যকেও খেতে দিব না। আগে বিটিভিতে একটা বিজ্ঞাপন দিত, সেখানে এমনটা বলা হত, ‘একা একা খেতে চাও দরজা বন্ধ করে খাও’। এরা তা ক্যানো করে না। আজন্ম-সিঙ্গেলদের দেখিয়ে দেখিয়ে ক্যানো খেতে হবে?