ভালোবাসা কোনো আত্মীক ব্যাপার, এমন নয়। যদি এমন হয়, তাহলে ঘৃণা করাও আত্মীক ঘটনা।
আমার মনে হয় ভালোবাসা একটা স্বভাব। আর কোনো কিছুকে ( আই এমফাসাইজ, যে-কোনো-কিছুকে) আত্মীকরণ করতে তিনটা ধাপ অতিক্রম করতে হয়।
নাম্বার ওয়ান প্র্যাকটিস। ‘প্র্যাকটিস’এর অনুবাদ-শব্দ হিসেবে বলা যেতে পারে ‘অভিনয়’। যদি ভালোবাসাও আত্মীকৃত করতে হয় অবশ্যই প্রথমে আপনাকে ‘ভালোবাসি’ ‘ভালোবাসি’ প্র্যাকটিস করতে হবে কোনো অভিযোগ ছাড়াই। এই প্রথম ধাপেই আপনি বুঝতে পারবেন আপনি তার অনেক কিছুই সহ্য করতে পারেন না। সুতরাং ভালোবাসা কোনো আত্মীক ব্যাপার নয়।
কম্পিউটারে সফটওয়্যার দু’ প্রকার। একটা সিস্টেম অন্যটা অ্যাপ্লিকেইশন। সিস্টেম সফটওয়্যার যেটা কম্পিউটার তৈরির সময়ই প্রস্তুতকারক কম্পিউটারের মাদারবোর্ডে সেট-আপ করেন। আর অন্যদিকে অ্যাপ্লিকেইশন সফটওয়্যার যেটা আপনি আপনার প্রয়োজনানুসারে ইনস্টল করেন।
ভালোবাসা, ঘৃণা, হিংসা, অনেস্টি, ইভন ম্যানার তথা হাম্বলনেস–আর হিউম্যান অ্যাপ্লিকেইশন সফটওয়্যারস।
চয়েস ইজ ইওরস। উইচ ইউ ওয়ান্ট টু ইনস্টল।
তো, নাম্বার দুই হচ্ছে অভ্যাস। বিনা বিরতিতে আপনি প্র্যাকটিস যদি বেশ কিছুদিন চালিয়ে যেতে পারেন তাহলে সেটা আপনার তখন অভ্যাস হয়ে যায়। বিজ্ঞানের তথ্যানুযায়ী এই ডিউরেইশন একুশ দিন।
আর তারপরই তৃতীয়ধাপ। স্বভাব। কোনো অ্যাপ্লিকেইশন তখনই স্বভাব হয় যখন প্র্যাকটিস এবং অভ্যাস সফল হয়।
আর স্বভাবের পরবর্তী উচ্চতম এবং সর্বশেষ পর্যায়ই হচ্ছে আত্মীকৃত হওয়া। তখন অ্যাপ্লিকেইশনটা আত্মীকৃত হয় বা আমরা বলি ভালোবাসা আত্মীক। কিন্তু আসলেই ভালোবাসা একটা অভ্যাসের ব্যাপার মাত্র।
অভ্যাসের ডিউরেইশন অর্থাৎ কতদিন অভ্যাস ধরে রাখতে পারলে সেটা স্বভাব হবে–এটার ইগজ্যাক্ট পরিমাপ বলাটা মুশকিল। এটা অ্যাপ্লিকেইশন এবং ওই ম্যান এর উপর নির্ভরশীল। এটুকু বলা যায় ভালোবাসা একটা দীর্ঘ প্রসেস আর তার তুলনায় ঘৃণা খুব দ্রুত গতিশীল। প্রত্যেক প্রাণীর জন্য সময় ভিন্ন ভিন্ন ভাবে পরিগণিত হয়। সময় ইউনিভার্সাল নয় শুধু গ্রহ সাপেক্ষে তা নয়, কোন একটা গ্রহের প্রতিটা কণার জন্যও সময় রিলেটিভ।
ইউনিভার্সে যে যে সম্পর্কের সেতু ভালোবাসা তার অধিকাংশই স্বভাব বা আত্মীকৃত পর্যন্ত পৌঁছায় না, অভ্যাসে এসেই ওঠানামা করতে থাকে,
একমাত্র মায়ের সন্তানের প্রতি ভালোবাসা ছাড়া। এই একমাত্র ভালোবাসা, যেটার কোনো কারণ নেই। ভালোবাসা তখন আত্মীকৃত হয় যখন ‘কেন ভালোবাসো?’ এর উত্তর কোনো কারণ হয় না, হয় ‘ভালো না বেসে পারি না!’