Portrait of an elderly man in a hoodie, capturing the essence of thought and introspection.

ছিন্ন-ভিন্ন কথা

A lone traveler stands on a hilltop, gazing over a vast mountain landscape under a clear blue sky.

মাঝে মাঝে ইচ্ছে করে একটা কোথাও ডুব দিই বা কোনো চালার মধ্যে সান্ধায় যাই। কারো সাথে কথা বলতে ইচ্ছে করে না আমার। কারো সাথে না! এই দুইটা লাইন চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে করে। পৃথিবী পৃষ্ঠ থেকে খানিকটা উপরে উঠে গলা ফাটিয়ে বলে দিতে ইচ্ছে করে।

কারো দিকে তাকাতেও ইচ্ছে করে না। শুধু ইজি বাইকোয়ালাকে ভাড়া দিতে তার দিকে একবার তাকানো পড়ে। তাও তার হাতের দিকে। কত দিলাম আর কত দিল এই যোগ-বিয়োগ মিলাতে।

তবু কিন্তু হাসতে হয়, চোখে চোখ রাখতে হয়। পাছে আবার কেউ ভেবে না বসে ভীষণ ভাবওয়ালা বা গোমড়া বা ভোদোড়, তাই হেসে কথা বলি। কত বছর হয়েছে জানি না যে হাসার ইচ্ছায় হেসেছি। কেউ শালা জিজ্ঞেসই করে না—’তুই এতো হাসিখুশি থাকিস কীভাবে? তোর শালা দুঃখ-ফুঃখ হয় না?’

তাহলে কি যা করতে ইচ্ছে করে না তাই করাই লাইফ?

কত মোটিভেইশন দি’ মানুষকে—অনেক অচেনা মানুষকে, স্টুডেন্টদের, মাকে, একে-তাকে, কিন্তু নিজের বেলায় নিজের সব স্পিচ একদম ভুয়া তুচ্ছ মনে হয়। ওদেরও কি কোনো কাজে আসে তাহলে?

মাঝে মাঝে মনে হয় কেউ নেই! কিন্তু এটা সত্য না। সবাই এবং সব আছে। আমার। মনে হয় সারা পৃথিবী আমার দিকে পিছন ফিরে সবাইকে নিয়ে অন্য দিকে মুখ করে তাকিয়ে আছে। এটাও সত্য না। কিন্তু যখন কেউ বলে না তোর চোখ ত কখনো ভিজতে দেখি না—তখন মনে হয় এরা শালা আমার কেউ না। সবাই আসলে আরো অনেকের।

এবার একটু বানান খারাপ করতে চাই। সরি!

দিনগুলো ভালোই কিন্তু যাচ্ছিল। খাচ্ছিলাম, দাচ্ছিলাম, মাস্টারবেইট করছিলাম। হঠাত কোথা থেকে এক পোকা এল। বললে—তোর ত বয়েস হয়ে গেলরে। এখনো একটা মেয়ে পটাতে পারলি না? আজীবন আচোদাই থেকে যাবি নাকিরে?

শুনতে খারাপ লাগলেও কথা কিন্তু সত্যি। আমার ত আরো মনে হয় চোদ বা চোদা এই শব্দ দুইটাকে উপসর্গ অনুসর্গ ও প্রত্যয় হিসেবে ইচ্ছেমত বসিয়ে যত স্লাং-ওয়ার্ড বানানো যায় আমি সবই তার যোগ্য।

নিকৃষ্ট হলেও এট লিস্ট একটা আর্থ্রোপোডা পোকা আমাকে ব্যাপারটা মনে করিয়ে দিয়েছে যে পৃথিবীকে আমি যে আইডিওলজিকাল চশমা দিয়ে এতোদিন দেখে আসছিলাম তা হয়ত পরিবর্তন করার সময় এসেছে। যখন দেখি সিক্স-সেভেন পড়ুয়ারাও ফাকাফাকি করে তখন আমার সকল ফিলোসফি দুড়মুড় করে ভেঙ্গে যায়। তুমি ত এতোদিন ধরে শুধু চেঁছেই গ্যালা মামা! ওরা আমাকে বলে।

যে তোমার সে ঠিকই একদিন তোমার হবে। ঠাকুর-মাকুর বিশ্বাস করি না। কিন্তু উক্ত বাক্যের উপর বিশ্বাস স্থাপন করে এতোদিন উঁইচুই করিনি। এখন সব কিছুকেই ভুয়া লাগছে। এই এক মিথ্যা দিয়েই নিজেকে এতোদিন মোটিভেইটিড করে এসেছিলাম।

বুঝেছি গুড-বয় মিস্টার-পারফেক্ট সেজে থাকার কোনো মাহাত্ম্য নেই। বোতলের ছিপি এবার খুলতে হবে। আমি দেখেছি যারা যত বেশি গুড-বয় তারা তত বেশি অকাজের। অপদার্থ।

পরিশেষে বলতে চাই, এখনো একটা কুসংষ্কারে বিশ্বাস করি তা হলোঃ কেউ সৎ থাকলে এবং ভালো কিছু করলে তার জন্য সম্ভবত ভালো কিছুই অপেক্ষা করে। আরো একটু অপেক্ষা করে দেখি। উপেক্ষিত থেকে দেখি। আটশ কোটি থেকে একজন অভুক্ত থেকে মারা গেলে পৃথিবী এবং আমার কারো কিছু এসে যাবে না। মৃত্যুর আগে জরুর বাতাউঙ্গা কী কিয়া হুয়া অন্তিমমে।

আরেকটা কথা– দেশ রাজনীতি বন্যা মৃত্যু ইত্যাদি নিয়ে মাথা না ঘামিয়ে কেউ এসব লুতুপুতু নিয়ে পড়ে আছে এ নিয়ে বিস্মিত হওয়ার কিছু নাই। কলিঙ্গ, ওয়ার্ল্ড ওয়ার থেকে চব্বিশের ম্যাস রেভ্লিউশন, এম ই, রাশিয়া-ইউক্রেন, বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কান্ড-কারখানা, কন্সটিটিউশন অভ পিপলস্‌ রিপাভ্লিক অভ বাংলাদেশ, আয়নাঘর ইত্যাদি নিয়ে মুটামুটি গ্যান গ্যাদার করেছি। কিন্তু এগুলো শুধু প্রিলি-রিটেন পাশ করার জন্যই আমার কাছে গুরুত্ব বহন করে। এছাড়া মৃত্যু বা পৃথিবী ধ্বংসের মত কোনো ঘটনা নিয়ে আমার মাথা ঘামে না। এতো এতো মানুষের মৃত্যু নিয়ে যদি ঈশ্বরের কিছু এসে না যায়, আল্লাহ্‌র কিছু এসে না যায় ,আমি ত সামান্য কীট মাত্র! আমার এসে-যাওয়া দিয়ে আদৌ কিছু এসে যাবে না। আমার বেদনায় শুধু কয়েক লাইনের একটা কবিতা রচিত হতে পারে। আর কিচছু না।

আমি ত চাই পৃথিবী বরং ধ্বংসই হোক। শুধু সে আর আমি বেঁচে থাকি। একখন্ড পাথরের উপর ভাসতে থাকব। তারপর এ ধরিত্রীতে নিয়ে আসব রিজুভানেইশন। আবার আটশ কোটির একটা ডিমক্রাসি গড়ে তোলার প্রসেস শুরু করব দুজনে।

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *