হে পুরুষ, আল্লাহ কি তো

হে পুরুষ, আল্লাহ কি তোমাকে সেক্স করার জন্যই তৈরি করেছেন?
একদিন গখুব ভীর রাতে আমার ঘুম ভেঙে যায়। পাশের ঘর থেকে আবছা কিছু কথা ভেসে আসল। শুনলাম একজন মহিলা-কণ্ঠে বলছে, “আমি কি যন্ত্র? সরো…!” তারপর একটা গভীর শ্বাস ছিটকে পড়ল ঘরজুড়ে। জানি না, আর কী হয়েছিল। যত সম্ভব বালিশে কান আটকে ঘুমানোর চেষ্টা করেছিলাম, সেরাতে অনেক দেরিতে ঘুম এসেছিল।
একজন বিবাহিতা স্ত্রী তাঁর স্বামীর কাছেও নিরাপদ না, তাহলে রাস্তায় চলে-ফিরে ঘুরে বেড়ানো নারীরা নিরাপত্তা পাবে কীভাবে?
ওই নারী কি ওই রাতে ধর্ষিত হয়নি?
এরকম হাজারো ছোট ছোট ছোটগল্প তৈরি হয় প্রতি রাতে প্রতি ঘরে।
নারী কি একটা সেক্স-টয় মাত্র?
তাঁর অনুভূতি অনুমতির কোনো প্রয়োজন নেই!
হায় পুরুষ!
খাঁড়ায় গেছে আর কী করা, পাশে কেনা সম্পত্তি ঘুমিয়ে আছে, শায়া উঁচু করার অধিকার ত তোমারই।
আর যদি ছুটোছুটি মারে, গলা চেপে ধরো। কোনো মামলা হবে নাতো তোমার নামে।
এক ছেলের মাসিমার মেয়ে তাদের বাড়িতে বেড়াতে এসেছে। মেয়েটি সবে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। ছেলেটি তখন ক্লাস এইটে। রাতে খাওয়া-দাওয়া শেষে মাসিমা তাদের এক খাটে শোয়ার যায়গা করে দিয়েছে। যেহেতু তারা ভাইবোন, মাসিমা আর কিছু ভেবে দেখেনি তখন। গভীর রাতে মেয়েটি অল্প অল্প বুঝতে পারে একটা হাত তার বুকের ওপর। ছোট ভাই হয়ত ঘুমের ঘোরে হাত এসে পড়েছে। কিন্তু কিছুক্ষণ পর মেয়েটি চকিত হয়, এবার হাতটি তার গলার কাছ থেকে কামিজের ভিতর প্রবেশ করে। সে বুঝতে পারে এ তার সেই ছোট্টো ভাইটা নয়, তার মাসিমার ছেলে এ নয়, এর নাম ধর্ষক।
আরেক মুসলিম ঘরের মেয়ে আমাকে বলেছিল, সে যখন টু-তে পড়ে, তার ফুফা তাকে কোলে নিয়ে খুব আদর করত। সে হঠাৎ একদিন বুঝতে পারে, ফুফা আদরের নাম করে তার শরীরে কিছু একটা খুঁজছে। আজও জানা যায়নি, ফুফা কী খুঁজছিল সেদিন তারই মেয়ের শরীরে?
মেয়ের এই কথা সেদিন তার মা-ও বিশ্বাস করেনি, বরং মেয়েকেই ঝাড়ি খেতে হয়েছিল, ফুফার নামে এমন বিশ্রী কুরুচিকর মন্তব্য বাচ্চা-মেয়ের মুখে শুনে।
আরও কিছু বলে লেখা দীর্ঘ করা শব্দ অপচয় ছাড়া, আর কিছু নয়।
যতদিন না পুরুষের লিঙ্গের ওপর তার মস্তিষ্কের নিয়ন্ত্রণ আসবে, ততদিন এসব চলবে।
শাস্তি আইনের আওতায় এনে হয়ত বিচারকার্য, হয়ত ন্যায্য বিচারই করা যেতে পারে, কিন্তু ধর্ষকের জন্ম নিয়ন্ত্রণ কে করবে? এ ভ্রূণ ত আমাদের সমগ্র পুরুষের পুরুষতান্ত্রিক নিউরনে নিউরনে গেঁথে আছে!
মামলা-টামলা করে এ-দেশে কিসসু হবে না, ধর্ষকেরও তাতে কিসসু ছেড়া যায় না। শুধু শুধুই সমাজে মেয়েটার পরিচয় হয় ধর্ষিতা। আর ধর্ষকের পরিচয়? হা হা! “পুরুষ মানুষ ত, ওরম এট্টু-আধটু কত্তিই পারে, তাই কী হয়িছে।” (এই কথাগুলোও দেখবেন কোনো এক মহিলাই বলছে।)
আমার মনে হয় নারীর মামলা করে ন্যায্য বিচার পাওয়ার আশায় আইনের ওপর ভরসা না করাই উত্তম। কাছে নতুন ধারালো ব্লেইড রাখুন, আপোসে মিলিত হন, তারপর সুযোগ বুঝে কেটে দিন। ব্যস্ ধর্ষক ধর্ষিতা কোনো পরিচয়ই আর বহন করতে হলো না কারো। খুব ভালো উপদেশ নয় যদিও, তবুও এতটুকু করা যেতেই পারে।
সম্প্রতী নোয়াখালীর এই ব্যথিত-ঘটনা ঘটার পূর্বে কয়েকটা লাইন খাতায় লিখেছিলাম। এখানে এ্যাড করে দিই–
চুমুর স্বাদ শেখেনি যে নারী-ঠোঁট,
ভালোবাসার ঘ্রাণ জন্মেনি যে নারী-স্তনে,
পুরুষ জিহ্বা লেহন করে তার যোনিদ্বার।
অবাক তাকিয়ে রয়,
নিস্তব্ধ পৃথিবী বিবস্ত্র-চোখে।
উপভোগ করে আর্ত-নারী-চিৎকার।
এ নির্লজ্জ পৃথিবীর চোখে ধুলো ছিটিয়ে দাও,
হে নারী!
ঈশ্বর এর বিচার করবে না!
আর আইন?

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *