A circle of friends forming a star shape with fingers, symbolizing unity and teamwork.

বন্ধু যত কম ততই ভালো?

 

পৃথিবীতে যত বন্ধু কম হয় ততই ভালো। যত বন্ধু বেশি তত বেশি দায়ভার।

 

এটা একধরণের স্বার্থপরতার সাইনও বটে। আবার আমি তেমন ভালো নোই বন্ধুত্ব তৈরি করতে সেই জন্য একথা বলছি সেটাও সত্য।


আমার এক বন্ধু তার এক বন্ধুর সাথে চায়ের দোকানে আমায় পরিচয় করিয়ে দিল। আমি সহজে আপনি থেকে তুমিতে নামতে পারি না। কিন্তু ফ্রেন্ড অভ ফ্রেন্ডের বারবার তুমি-তুমি বলায় একসময় আমিও তুমি করে বলব–কারণ আমার নিজের তখন মনে হয় খামোখাই তাকে বেশি রিসপেক্ট বা ফরমালিটি(যেভাবেই সংজ্ঞায়িত করুন) দেখানো হচ্ছে। কিন্তু আমি জানি না সে আমাকে তার বন্ধুর মতোই আমাকে তার মস্তিষ্কে জায়গা দিয়েছে কিনা। সেদিন কাপের লাল লেবু-চায়ে চুমুকের ফাঁকে ফাঁকে বাংলাদেশের বেকারত্ব রাজনীতি চাকরি-বাকরির পড়াশোনা হিন্দি মুভি ইত্যাদি আলোচনার সাথে আকাশের তারার গতিপথ দেখে আমাদের শেষ করতে হয় আড্ডা। তারপর একটা হ্যান্ডশেইক।


এইবার একদিন ডাক বাংলার যশোর রোড বা রেলস্টেশন মার্কেট কিংবা শপিং মল অথবা সাত রাস্তার মোড়ে দেখা, একবার চোখে চোখ পড়ল কি পড়ল না–
এই কনফিউশনেও আমার মস্তিষ্ক তাকে চিনতে পেরেছে। ভিড়ের মধ্যে চিল্লিয়ে বললাম, হেই, ক্যামন আছো? সে একবার মনোযোগ দিয়ে ভাবল কে তা কে-জানে আমাকে ডাকে ক্যানো–এই উত্তর তার মস্তিষ্ক দিতে ব্যর্থ হওয়ায় সে নিরিপ্লাই চলে গেল।


আমি কিন্তু কিছু এতে মনে করলাম না। আমার মস্তিষ্ক আমাকে বোঝালো ও আসলে শুনতে পাইনি।
ওকে, ভালো কথা!


আরেকদিন আরেক ফ্রেন্ড অভ ফ্রেন্ডের সাথে মনে করুন এক মন্দিরে চোখাচোখি হয়ে গেছে। আমার মস্তিষ্ক আমাকে ভাবাল ও আসলে আমার দিকে না আমার পিছনের খোলা চুলের যে মেয়েটা ওড়না ঠিক করছিল তার দিকে তাকিয়েছে। এই ভেবে আমি তাকে হাই-হ্যালো না করে তার পাশের মেয়েটার দিকে খানিক তাকিয়ে থাকলাম। এই মেয়েটার কপালভরা চুল, মোটা ভুরু এবং ডাগর চোখ। তাকিয়ে থাকতেই ভালো লাগে। ছোঁয়া যায় না।


কিন্তু এবারের ঘটনা হলো অন্যরকম। আমার বন্ধুর কাছ থেকে জানতে পারলাম যে ওই ফ্রেন্ড অভ ফ্রেন্ড আমার সাথে কথা বলতেই চেয়ে ছিল কিন্তু আমি না তাকানোয় সে কিছু বলেনি এবং সে এও বলেছে যে, সে আমার এটিটিউডে শকড।
এই শুনে আপনার মস্তিষ্ক আপনাকে কী ফিল করাত? আমি জানি না। কিন্তু আমার মস্তিষ্ক আমাকে কিন্তু ব্যথিত করাচ্ছে। একদম উচিত হয়নি, সব ফ্রেন্ড অভ ফ্রেন্ড কি একরকম হয় ইটিসি ইটিসি।


ঘটনা আরো সেনসিটিভ হয় যখন আপনার রুমমেইট-এর মেসো বা মাসি অথবা মামা বা মামি (অর সামওয়ান বি রিলেইটেড উয়িদ ইওর রুমমেইট, যার সাথে ঘটনাক্রমে মেসে দ্যাখা হয়েছিল একবার এবং আপনি কেমন আছেন আংকেল বা আন্টি বলে শুভেচ্ছা রক্ষা করেছিলেন) রুমমেইটের সঙ্গে বলে, আপনার ম্যানার মন্দ, “কেন ওরম ছেলের সাথে থাকিস” “সেদিন ওই অনুষ্ঠানে দ্যাখা হলো আমি এত করে তাকালম একটাবার এগিয়ে এসে কথা পর্যন্ত বলল না!” কিন্তু আসলে এমন হয়নি রাদার আপনিই কথা বলতে এগিয়ে যাচ্ছিলেন কিন্তু সেই সো-কলড আত্মীয় বা আত্মীয়া আপনার থেকে চোখ ফিরিয়ে নেওয়ায় আপনি ফিরে এসেছিলেন।
তাহলে কেমন লাগবে বলুন?

সো, যত কম পরিচিত ততই কম বেকুব।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *